সব
২৫ জুন প্রবিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত ও পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সাথে দেশের বানিজ্যিক রাজধানী খ্যাত চট্টগ্রামের যোগাযোগ সহজতর ও আরামদায়ক করতে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ ঈদের সময় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে স্পেশাল ট্রেন চালু করে। যাত্রীদের চাহিদা ও রেলটি বেশ লাভজনক হবার কারনে কর্তৃপক্ষ ট্রেনটির চলাচলের মেয়াদ বাড়ায়।
কিন্তু দেশের জনগনের বৃহত্তর স্বার্থে ও রেলের লাভজনক একটি রুটকে কেন বিশেষ বিশেষ সময় বিশেষ ট্রেন পরিচালনা করতে হবে? দেশের অর্থনৈতিক প্রাণশক্তি অর্থনৈতিক হাব, শিল্প ও বন্দরনগরীর সাথে পর্যটন নগরী কক্সবাজারের সাথে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে কেন স্থায়ী ট্রেন সার্ভিস হবে না? সেটি এখন নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন দেশের ক্রেতা-ভোক্তাদের জাতীয় প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠান কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ(ক্যাব)চট্টগ্রাম বিভাগ ও নগর কমিটির।চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটের স্পেশাল ট্রেনকে পৃথক স্থায়ী ট্রেন চালুর দাবিতে এক বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ উপরোক্ত মন্তব্য করেন।গতকাল ২৪ জুন গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন ক্যাব কেন্দ্রিয় কমিটির ভাইস প্রেসিডেন্ট এস এম নাজের হোসাইন,ক্যাব চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাধারন সম্পাদক কাজী ইকবাল বাহার ছাবেরী,ক্যাব মহানগরের প্রেসিডেন্ট জেসমিন সুলতানা পারু,সাধারণ সম্পাদক অজয় মিত্র শংকু,ক্যাব চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা প্রেসিডিন্ট আলহাজ্ব আবদুল মান্নান, ক্যাব যুব গ্রুপ বিভাগীয় সভাপতি চৌধুরী কে এন এম রিয়াদ,ক্যাব যুব গ্রুপ নগর সভাপতি আবু হানিফ নোমান প্রমুখ।
বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন,ঢাকা থেকে সমগ্র জেলার যাত্রীরা কক্সবাজার যাবার জন্য রেলকতৃপক্ষ পৃথক ট্রেন চালু করলেও চট্টগ্রামের যাত্রীদের স্বার্থ উপেক্ষা করে চট্টগ্রাম থেকে খুবই নগন্য সংখ্যক যাত্রী নেবার ব্যবস্থা করছেন।অন্যদিকে ঈদ উপলক্ষে কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন চালু করা হলেও তা সাময়িক।যা এতদাঞ্চলের সাধারন জনগনের সাথে তামাসার সামিল। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে যদি আন্তঃ নগর ট্রেন কক্সবাজার স্পেশাল ও পর্যটন এক্সপ্রেস চলাচল করতে পারে, সেক্ষেত্রে এই রুটে পৃথক ট্রেন চালুতে বাঁধা কোথায়? তা জাতিকে জানানো দরকার।বিবৃতিতে নেতৃবৃন্দ বলেন, মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায়,বিশাল চ্যালেঞ্জ নিয়ে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত রেললাইন সম্প্রসারণ হবার কারণে দেশের অন্যান্য স্থানের পাশাপাশি চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের মানুষও কৃতজ্ঞ।কিন্তু চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে পৃথক ট্রেন না থাকায় ও বিশেষ ট্রেন চলাচলও সাময়িক হবার কারণে এ অঞ্চলের জনগণের মাঝে হতাশ।যেখানে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রুটে ট্রেনের সংখ্যা বাড়ানোর কথা,সেখানে ঘটছে এর বিপরীত।নেতৃবৃন্দ ক্ষোভপ্রকাশ করে বলেন,বর্তমান সরকার প্রায় সাড়ে ১৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নতুন রেলপথ সম্প্রসারণ করেন।গত বছরের ১১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দোহাজারী থেকে কক্সবাজার পর্যন্ত নির্মিত ১০০ কিলোমিটার দীর্ঘ নতুন রেললাইনের উদ্বোধন করেন।ওই বছরের ১ ডিসেম্বর একটি এবং চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি থেকে আরেকটিসহ ঢাকা থেকে দুটি আন্তঃনগর ট্রেন চালু করেন।এই দুটি ট্রেনে চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে যাতায়াতের জন্য মাত্র ১১৫টি করে আসন বরাদ্দ রাখা হয়েছে।ঢাকা থেকে দুটি রেল চলাচল করলেও এই অঞ্চলের লোকজন রেলে যাতায়াতের সুবিধা থেকে বঞ্চিত রয়েছে।ঢাকা থেকে কক্সবাজার রেলপথে দুটি আন্তঃনগর ট্রেনে চট্টগ্রামের যাত্রীদের মাত্র একটি এসি ও একটি নন এসি দুটি কোচ বরাদ্দ রাখা হলেও যাত্রীদের চাহিদার সংগে সঙ্গতি পুরণ হচ্ছে না।যা চট্টগ্রামবাসীর অধিকারকে পুরোপুরি অবজ্ঞার সামিল।তাই ঈদ উপলক্ষে চালু হওয়া চট্টগ্রাম-কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেনটি এই রুটে স্থায়ী ট্রেনে পরিণত করা হলে এতদাঞ্চলের যাত্রীদের প্রতি সুবিচার করা হবে।নেতৃবৃন্দ হুশিয়ার করে দিয়ে বলেন, স্থায়ীভাবে চালু করতে কালক্ষেপন বা গড়িমসি করেন,তাহলে চট্টগ্রামের সর্বস্তরের জনগনকে নিয়ে কঠোর আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
মন্তব্য